সরকারি সংস্থাগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্যই করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে : প্রধানমন্ত্রী

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করায় সরকার দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ স্বাস্থ্য অধিদফতর বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে অনেক কথা বলছে, আমি জরুরি ভিত্তিতে তাদের যে নির্দেশনাই দিয়েছি তারা তা করেছে। তারা সঠিকভাবে কাজ করেছে, এ কারণেই আমরা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।’
শনিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তিনি যখন কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন তখন তাদের সরকারি নিয়মের বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে দ্রুত কাজ করতে বলেছেন। কারণ দেশের মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য সেগুলো খুব জরুরি ছিল।
‘আমাদের কাজ করতে হবে, আমাদের বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করতে হবে, আমাদের জনগণকে চিকিৎসা দিতে হবে, আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে, এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জরুরি বিষয়ে সব নিয়ম অনুসরণ করার দরকার নেই। কেউ যদি কারো জন্য কোনো সমস্যায় পড়েন, সেটা আমরা দেখব,’ বলেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকার জরুরি ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক ও তিন হাজার নার্সের পাশাপাশি কিছু টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছে।
‘আমি অর্থ ও জনপ্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে একসাথে বসতে বলেছি। এসব চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান নিয়োগে আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে কাগজে সাইন করেছি,’ বলেন তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশের আরো চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান দরকার হওয়ায় সরকার এ বিষয়ে কিছু নীতি শিথিল করে।
তিনি জানান, মহামারির শুরুতে যত দ্রুত সম্ভব সরকার জেলা পর্যায় পর্যন্ত হাসপাতালগুলোকে অক্সিজেন সরবরাহ ও আইসিইউ ব্যবস্থাসহ প্রস্তুত করে তুলে।
তিনি জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সহায়তার জন্য সব সরকারি সংস্থা এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে তাদের সমন্বিত আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।
‘শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের জন্যই জনগণ সহযোগিতা পেয়েছে, যদি অন্য কোনো দল (ক্ষমতায়) থাকত তবে অসংখ্য মানুষ মারা যেত, তারা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়ত,’ বলেন তিনি।
বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তাদের দুর্ভোগ লাঘবে চেষ্টা করেছে, এমনকি তাদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ বিমান পাঠিয়েছে।
‘তারা এ মাটির সন্তান, আমরা তাদের মানুষ হিসেবে দেখি, আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা বিদেশে তাদের প্রণোদনা দিয়েছি,’ বলেন তিনি।
তিনি দেশের অর্থনীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, সরকার প্রয়োজন থাকা সবাইকে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে।
খাদ্যশষ্য উৎপাদনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার জন্য দেশের কৃষকদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ জন্যই দেশ খাদ্য সংকটে পড়েনি।
ফসল কাটার মৌসুমে কৃষকদের সাহায্যের জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
তিনি জানান, করোনা মহামারিকালে আওয়ামী লীগের ৫২২ নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। ‘অন্য কোনো রাজনৈতিক দল এত বড় ত্যাগ স্বীকার করেনি, তারা কেবল মুখে কথাই বলেছে, তাদের মাঠে মানুষের পাশে দেখা যায়নি,’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরো উল্লেখ করেন, দেশে এমন অনেকগুলো সংগঠন রয়েছে যারা সাধারণত দরিদ্র লোকদের সহায়তা করে থাকে, তবে এ মহামারি পরিস্থিতিতে তাদের কার্যক্রম দেখা যায়নি।
‘এটাই বাস্তবতা, সবাই ঘরের মধ্যে ছিল…মানুষের পাশে কেউ ছিল না। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল হওয়ায় মানুষের পাশে ছিল…এটি মানুষের কল্যাণে কাজ করে, আমরা মানুষের পাশে থাকি এবং সর্বদা তাদের পাশে থাকব,’ বলেন তিনি।
সূত্র : ইউএনবি
Related News

৩ জুলাই : কোটাবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল শিক্ষাঙ্গন, বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীRead More

অপতথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘকে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান, প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অপতথ্য মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং গণমাধ্যমকে নৈতিক মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদানRead More