Main Menu

দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত ৩,৪৭১ জন, ৪৬ জনের মৃত্যু

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রেকর্ড ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত এই ভাইরাসে মোট ১ হাজার ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল। ওইদিন ৪৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আক্রান্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের দিনও এই হার ছিল ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
এ দিকে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮১ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৮১ হাজার ৫২৩ জন রোগী রয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক ১৫ হাজার ৯৯০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৪৭১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। গতকালের চেয়ে আজ ২৮৪ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ১৮৭ জন।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ২১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৭ হাজার ২৪৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫০২ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কম।
তিনি জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় এ যাবৎকালের সর্বাধিক ১৬ হাজার ৯৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ১১৪টি। গতকালের চেয়ে আজ ৮৩৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৫৯টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৯৯০টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৭৭২টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২১৮টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩২২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ।
তিনি জানান, করোনায় মৃত ৪৬ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৭ জন, নারী ৯ জন। বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ১০০ বছেরের ঊর্ধ্বে ১ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩২ জন, বাড়িতে মারা গেছেন ১৪ জন। বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন, বরিশাল বিভাগে ৩ জন, রংপুর বিভাগে ৫ জন, খুলনা বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন মারা গেছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৪৩৬ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৪ হাজার ৭৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৮৮ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ৫ হাজার ৬১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৯ হাজার ১২ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৮৮৮ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার ২৩২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৩৪ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৯ হাজার ৮৫৩ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ৯ হাজার ১৪২টি। ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ১৫ হাজার ৩শ’টি এবং এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৫টি। বর্তমানে ২ লাখ ১০ হাজার ২৬৭টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ ৯২ হাজার ৪৮১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩২৭ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৭ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৫৭৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ১৫ হাজার ৫৩৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৭৪০ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৭ হাজার ৪১৪ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৩০ জনের এবং এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু ১১ হাজার ১৭১ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৪১৯ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৩৪৭ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৭২ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পড়ে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

সৌজন্যেঃ বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *