Main Menu

খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স এবং আটটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

‘মুজিববর্ষ নিয়ে চাঁদাবাজির সুযোগ নেই’ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং সম্মান দেখাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। যারা মোদীর সফরের বিরোধিতা করছেন-এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হযরত মোহাম্মদ (সা.) অতিথিদের নিরাপত্তা ও সম্মান দেখিয়েছেন। কে কোন ধর্মের তা কখনো দেখা হয়নি। এজন্য আমরাও অতিথিদের যথাযথ সম্মান করবো।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দু’টায় সিলেট সদর উপজেলার ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স এবং আটটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মেহমানকে অসম্মান করার একটা নমুনা আমাদের দেশে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে তাঁর বাসায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, তারা দরজা বন্ধ করে রেখেছিল। তিনি বলেন, আমরা তাদের মতো এতো বেয়াদব নই, অতিথিদের অসম্মান করবো। মোদীকে বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ইসলামি দলগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে সকলের মতামত জানানোর অধিকার আছে। তবে, আমাদের স্বাধীনতার বন্ধু রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে সর্বোচ্চ সম্মান জানাবে সরকার। বাঙালি বরাবরই অতিথিপরায়ণ, তাই অতিথিকে সম্মান জানাবে এদেশের সাধারণ মানুষ।
পরে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, গৃহহীনদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়াই হচ্ছে মুজিববর্ষের অঙ্গীকার। এজন্য আমরা সমাজ থেকে গৃহহীন দূর করতে চাই। অতিদরিদ্রদের তালিকা করে দিতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ধাপে ধাপে তাদেরকে গৃহনির্মাণ করে দেবো। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেট জেলায় শিক্ষার অবস্থা অনেকটা শোচনীয়। আমার অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর সিলেটে ১৩৭টি কলেজে নতুন ভবন বরাদ্দ দেন। প্রত্যেক ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে আড়াই থেকে ১০ কোটি টাকা। এ কাজগুলো শেষ হলে অবকাঠামোগত দুর্বলতা দূর হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পুরুষ ও মহিলা মিলেমিশে কাজ করলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি খাদিমপাড়ায় বিসিক’র আবর্জনামুক্ত নির্মল পরিবেশ গড়তে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ^াস দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সত্যিকারের সোনার বাংলা গড়াই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, তাঁর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখন উন্নত, সমৃদ্ধশালী, স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই। যাতে করে সবার জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, হয়ত এখনো আমরা সেখানে পৌঁছতে পারিনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা যেভাবে শক্ত হাতে হাল ধরেছেন, আপনারা যদি তাঁকে সাহায্য করেন অবশ্যই আমরা ‘মকসুদে মঞ্জিলে’ পৌঁছতে পারবো।
জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিগত সময়ে আমার বড় ভাই আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং এখন আমাকে নির্বাচিত করায় দেশের জন্য আমরা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উন্নত জীবন-যাপন করতে পারে সেদিকে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি রয়েছে। তবে, তারা যেন মাদকসহ নানা অপকর্ম হতে দূরে থাকে সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে। উদ্বোধনকৃত আটটি স্কুলের একাডেমিক ভবন নির্মাণে ৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশেষ অনুদান পেতে আমি প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হই এবং তিনি ৬০টি স্কুলে নতুন ভবনের অনুমোদন দেন। গত এক বছরে বেশিরভাগ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আশানুরূপ বরাদ্দ দিচ্ছে। তা যেন সত্যিকারের কাজে লাগে, সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি এবং তদারকি করার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তিনি সঠিকভাবে উন্নয়ন কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরে গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আফছর আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিনি সেলিনা মোমেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শফিকুর রহমান চৌধুরী, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার কাজী মহুয়া মমতাজ, লন্ডনের বারা অব ক্রয়ডনের মেয়র হুমায়ূন কবির, দৈনিক সিলেটের ডাক এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ ও এডভোকেট ছালেহ আহমদ সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশ, সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলম খান মুক্তি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমরা মুজিববর্ষে ভালো কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। এ নিয়ে চাঁদাবাজি করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশ দিলেও অর্থনৈতিক মুক্তি আসেনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট নাসির খান বলেন, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে সদর উপজেলা অবহেলিত ছিল। কিন্তু, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ধারাবাহিকতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এ উপজেলাকে উন্নয়নের রোল মডেল করেছেন।
অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন হয়। খাদিমপাড়া ইউনিয়নের দিকে তাকালে যে কেউ তা সহজেই অনুমান করতে পারবে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর নির্বাচনী এলাকাকে আধুনিক অঞ্চল হিসেবে গড়তে চান। সেলক্ষ্যে তিনি অগ্রসর হচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মুছব্বির, শাহপরাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুজ্জামান তাপাদার, শিক্ষক রুহুল আমিন, জেলা ছাত্রলীগ নেতা রুবেল আহমদ, নজরুল ইসলাম ও সুমন আহমদ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মখলিছুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচজন ছাত্রীর হাতে বাই সাইকেল তুলে দেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজের ক্ষেতের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের বিষমুক্ত শাক-সবজি ও ফলমূল উপহার দেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *