Main Menu

কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বান বাংলাদেশের

কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সংহতি ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
বৃহস্পতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্ক পর্বে দেয়া বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক বিষয়াবলী নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দ্বিতীয় কমিটি কাজ করে থাকে। প্রতিবছর জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় কমিটির এই সাধারণ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, কোভিড-এর ভ্যাকসিনগুলোতে প্রবেশাধিকার সার্বজনীন ও সাশ্রয়ী করা, এসডিজি’র ঘাটতি মোকাবিলায় অর্থায়ন, দারিদ্র্য ও অসমতার ক্রমবর্ধমান ধারার অবসান, অভিবাসী শ্রমিকদের সহযোগিতা প্রদান, রপ্তানি আয়ের নি¤œগতি রোধ, সকলের জন্য ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা নিশ্চিত এবং জরুরি জলবায়ু ও জীববৈচিত্র ইস্যুগুলো মোকাবিলা করার মতো বিষয়সমূহে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বাংলাদেশ।
করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে এ বছর দ্বিতীয় কমিটি সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য ‘কোভিড-১৯ পরবর্তীকালকে পুনরায় পূর্ববর্তী ভালো সময়ে ফিরিয়ে আনা : আরও ন্যায়সঙ্গত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সৃজন, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন ও কোভিড থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার নিশ্চিত’।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক পর্বে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন, এ কথা পুনরুল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘কোভিড-১৯ মুক্ত বিশ্বের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই ভ্যাকসিনসমূহে সাশ্রয়ী ও বৈশ্বিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’।
উন্নয়নশীল দেশগুলোর উৎপাদনশীল সক্ষমতা বৃদ্ধি, অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সঙ্কট থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে তাদের গৃহীত প্রচেষ্টাসমূহে অব্যাহতভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে জি-৭, জি-২০, ওইসিডি, এবং আইএফআই সমূহকে আর্থিক প্রণোদনা, সাশ্রয়ী অর্থায়ন ও ঋণ থেকে অব্যাহতি দানের মতো পদক্ষেপগুলো আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
এলডিসি থেকে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোকে পুনরায় যাতে এলডিসি পর্যায়ে ফিরে যেতে না হয় সেজন্য বিশেষ সহায়তা পদক্ষেপ গ্রহণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। উন্নয়নশীল দেশসমূহের রপ্তানী আয়ের ঘাটতি পূরণে এগিয়ে আসতে উন্নত অর্থনীতির দেশসমূহকে দেয়া প্রতিশ্রুতি পুরণের আহ্বান জানান তিনি।
শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, কারিগরি সহায়তা এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, ও মধ্যম সারির ব্যবসা ক্ষেত্রে আরও অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে উন্নত অর্থনীতির দেশসমূহের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে এ ঘাটতি মেটাতে পারে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
অভিবাসী কর্মীরা বহুমূখী যেসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছে তা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা এই সঙ্কটকালে তাদেরকে সহায়তা প্রদান এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী কর্মসংস্থান বাজারে তাদেরকে সন্নিবেশন করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
উদীয়মান প্রযুক্তিসমূহ এবং ডিজিটাল সেবার সুবিধাগুলো যাতে সবাই পেতে পারে তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন তিনি। উন্নয়ন অভিযাত্রার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী কৌশলের যে অনুশীলন করে যাচ্ছে তা সকলের সাথে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব করেন ফাতিমা।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জলবায়ু ও জীববৈচিত্র ইস্যুতে বৈশ্বিক সাড়াদানের ঘাটতির বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জরুরি জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবিলায় গঠিত ৪৮টি দেশের সংগঠন ‘ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরাম (সিভিএফ)’ এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ আরও অংশগ্রহণমূলক ও নেতৃত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে প্রতিশ্রুতির কথা জানান তিনি। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য ‘২০২১ জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ-২৬)’-এ আরও সাহসী প্রতিশ্রুতি নিয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য উন্নত অর্থনীতির দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান স্থায়ী প্রতিনিধি।

বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *