সুনামগঞ্জে উজিরের মৃত্যুর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় গরু চুরির অপরাধে পুলিশের মারধরে উজির মিয়া নামে এক কৃষক নিহত হওয়ার অভিযোগ তদন্তে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম ও সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবু সাঈদকে পৃথকভাবে কমিটি দুটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কমিটি গঠনের বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরের পর শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নিহত উজির মিয়াকে দাফন করা হয়েছে।
উজির মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তের ব্যাপারে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে। আমরা কাজ শুরু করেছি।’
নিহত উজির মিয়ার নিহত হওয়ার ঘটনায় তার পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে লাশটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় তার পরিবারের সদস্যরা মামলা করার বিষয়টি জানান।
উজির মিয়ার চাচাতো ভাই গোলাম মোস্তফা জানান, পুলিশের বেধড়ক মারপিটের কারণেই উজির মারা গেছেন। আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিচার চাই। অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও জানান তিনি।
নিহতের স্বজনেরা জানান, ১৩দিন আগে উপজেলার দরগাপাশা গ্রাম থেকে একটি গরু চুরি হয়। চুরি করা মালের ভাগ উজির মিয়া পেয়েছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও আক্তারুজ্জামান তাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় থাকার সময় থানা পুলিশের বেধড়ক মারপিটে উজির মিয়া আহত হন। তার জামিনের পর তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তিনি বাড়িতে এসেও সুস্থ হননি। সোমবার তিনি মারা যান।
উজির মিয়ার এভাবে মারা যাওয়ার কারণে তার লাশ নিয়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের পাগলা এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামেন এলাকাবাসী। কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পরে বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদির হোসেন বলেন, উজির মিয়াকে চোর সন্দেহে আটক করা হয়েছিল। আটকের সময় তিনি পালানোর চেষ্টা করলে একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাথায় আঘাত পান। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। পুলিশ তাকে নির্যাতন করেনি, যদি কোনো কিছু করে থাকে তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।
পুলিশের হেফাজতে আসামির মৃত্যুর বিষয়ে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, আসামিকে আটক করা হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। একদিন হাজতে রেখে পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ১১ তারিখে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর কোনো একদিন হয়তো তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু আজকে সকালে তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। তবে এখনো বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।
Related News

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে অভিযান মিললো আড়াই কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য
সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ফের ভারতীয় চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশRead More

মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুতRead More