Main Menu

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণে ২ মাসেও আদালতে অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ স্বামীর দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র ২ মাসে ও আদালতে দিতে পারেনি এসএমপির শাহপরাণ থানা পুলিশ।
দেশে বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এই গণধর্ষণ ঘটনার ডিএনএ প্রতিবেদনও এখনো পুলিশের কাছে এসে পৌছায়নি। পুলিশ বলছে, তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ। ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অভিযোগপত্র প্রদান করা হবে।
ধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্ট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসি কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিনটি কমিটিই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবেদনই প্রকাশ করা হয়নি। এদিকে, ধর্ষণের শিকার তরুণীর শারীরিক ক্ষত সেরে উঠলেও এখন মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তিনি এখন মানসিকভাবে বিধ্বস্ত আছেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী (২৫)। করোনার কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই রেখে তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাদের মারধর করে টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। ওই রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরীর শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। জনমতের চাপ মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে ধর্ষণবিরোধী আইনও সংশোধন করে সরকার। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে এখনও ডিএনএ রিপোর্ট আসেনি। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পেলেই অভিযোগপত্র প্রদান করা হবে।
তবে দুই মাসেও এই মামলার অভিযোগপত্র দিতে না পারাকে আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন আইন অনুযায়ী এসব মামলায় আসামি হাতেনাতে ধরা পড়লে ১৫ দিনের মধ্যে এবং হাতেনাতে ধরা না পড়লে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। ফলে এই সময়ের মধ্যে ডিএনএ রিপোর্ট চলে আসার কথা। তিনি বলেন, এধরনের চাঞ্চল্যকর মামলায় ডিএনএ রিপোর্ট আসতে এতোটা বিলম্ব কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। পুলিশের পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও এসব ক্ষেত্রে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন ছিলো। এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার স্বামী। মামলা দায়েরের পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও ঘটনার ৩ দিনের মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সকলেই ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এদিকে, ধর্ষণের রাতে এমসি কলেজে ছাত্রবাসে সাইফুর রহমানের দখলে থাকা কক্ষে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করে। সেই মামলার অভিযোগপত্রও এখনও দেয়া হয়নি। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, ডিএনএ রিপোর্ট আদালতে এসে গেছে বলে জানতে পেরেছি। আশা করছি শীঘ্রই আমাদের হাতে এসে পৌছে যাবে। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই অভিযোগপত্র প্রদান করা হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *