Main Menu

সিলেটে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে আরো সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে

সিলেট কুমারগাঁও গ্রিড উপ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে ছিলো পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জের একাংশ। নাভিশ্বাস দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল নগরবাসীকে। চারিদিকে শুরু হয় পানির জন্য হাহাকার। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে স্বাস্থ্য সেবাও ব্যাহত হতে চলছিল।

অবশ্য বধবার সন্ধ্যায় ৩২ ঘণ্টা পর আশা-নিরাশার দোলাচলে এলো আলোর ঝিলিক। বিদ্যুৎ বিভাগের ক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় নগরের আংশিক এলাকা আলোকিত হয়। আর দীর্ষ ৫৫ ঘণ্টা পর নাভিশ্বাস দুর্ভোগ শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ পেলো নগরীর আরো কিছু এলাকা।

শুক্রবার রাত পর্যন্ত মহানগরীসহ অন্তত ৭৫ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। তবে শতভাগ এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আরো সপ্তাহ দিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এখন সবগুলো এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে কাজ চলছে। তবে শতভাগ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সপ্তাহদিন সময় লাগবে।

তিনি বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দু’টি ট্রান্সফরমারের একটি মেরামত করে সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। আর শীত মৌসুমে বিদ্যুৎ ব্যবহারে চাহিদা কমে যায়। যে কারণে উচ্চ ক্ষমতার একটি ট্রান্সফরমার থেকে সরবরাহ চালু রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ অপর ট্রান্সফরমারটিরও কাজ চলছে। এছাড়া ৩৩ কেভি’র নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপনে কমপক্ষে ৩ মাস সময় লাগতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ, মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি উপ-কেন্দ্রে ২৫ দশমিক ৪১ এমবিএ দু’টি ট্রান্সফরমারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দমকল বাহিনীর ৭টি ইউনিট এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও দুটি উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার, সার্কিট ব্রেকার, কন্ট্রোল প্যানেল পুড়ে পুরো সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বুধবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের ডিভিশন-২ এলাকার আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, মিরাবাজার, উপশহর, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, সুবহানিঘাট, কাজিটুলা, বালুচর, টিলাগড় এলাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার নগরীর দাড়িয়াপাড়া, মির্জাজাঙ্গাল, রামের দিঘিরপার লামবাজার, শেখঘাট, ভাতালিয়াসহ বেশ কিছু এলাকায় ৫৪ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

দাড়িয়াপাড়া এলাকার অমল কৃষ্ণ দেব বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়া স্বত্বেও কেবল বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নগরবাসীকে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। দীর্ঘ ৫৪ ঘন্টা নাভিশ্বাস দুর্ভোগের পর বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে। এটার দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

নগরীর ভাতালিয়া এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগ ডিভিশন-১ এর আওতাধীন এলাকায় আমার বাসা। কিন্তু ডিভিশনের কিছু অংশে ৩২ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ দিলেও আমরা ৫৪ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সরবরাহ পেয়েছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, উপ-কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের দু’টি মেঘা ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্তের কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের অধীনে চারটি ডিভিশন ছাড়াও সুনামগঞ্জ, ছাতক ও জগন্নাথপুর এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।

ডিভিশন-১ এর অধীনে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) এলাকা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজারসহ সুরমা নদীর উত্তরপার।

ডিভিশন-২ এর অধীনে কুমারপাড়া, নাইওরপুরল, উপশহর, মিরাবাজার, সুবানীঘাট, বালুচর, মেন্দিবাগ, তের রতন এলাকা।

ডিভিশন-৩ এর অধীনে সিটি করপোরেশন এলাকার ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড ও দক্ষিণ সুরমার কিছু এলাকা। ডিভিশন-৪ এর অধীনে ডিভিশন কুমারগাঁও, টুকেরবাজার, বাধাঘাট, মদিনা মার্কেটসহ সদর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা।

এছাড়া সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর আবাসিক এরিয়া বিদ্যুৎহীন ছিল।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যুতের গ্রিডে ট্রান্সফর্মারে আগুন লাগে। এতে করে সাব স্টেশনের আশপাশের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সাতটি ইউনিট ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *