Main Menu

গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় মারা গেছেন ৩৫ জন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ৮৪৬ জন।
এদিকে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৬৩ হাজার ২৬ জন রোগী রয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৬৩৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
গতকালের চেয়ে আজ করোনাভাইরাসের ১৬৩ জন কম আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮২৮ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, নমুনা পরীক্ষায় আজ আক্রান্তের হার ২১ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ছিল ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। মোট আক্রান্তের ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং নারী ২৯ শতাংশ।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৩২৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৫২১ জন।
শনাক্ত বিবেচনায় আজ সুস্থতার হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আগের দিন সুস্থতার হার ছিল ২১ দশমিক ২০ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বৃহস্পতিবার সুস্থতার হার ছিল ২১ দশমিক ১৩ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৯০৯টি। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৪৫টি। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৭৩৬টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৫০টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৪৮৬টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৮টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৬০২টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৮৫১টি।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী ৩৫ জনের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের ২ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল বিভাগে ২ জন।
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে হাসপাতালে ২৫ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৯ জন। আর মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন ১ জন। এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং নারী ২২ দশমিক ৫৪ শতাংশ বলে তিনি জানান।
অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩১৪ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৭ হাজার ১৬২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৮ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৫ জন।
দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায়৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১০৬টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ২২২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৯২৫ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৬ হাজার ২৯৭ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষাধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ৯ হাজার ১১৪টি এবং এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২২ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৫টি। বর্তমানে ২ লাখ ৯২ হাজার ৬৬৭টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭৩টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৫৬১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ২৭৯ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৩৮৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ৮ হাজার ৫০৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ২৬৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২২ হাজার ৮৬৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৩২ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৯৪২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৫২৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ লাখ ৩৫ হাজারের ৩৫৪। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৮৮ জন এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৫৫ জন।
আপনার সুস্থতা আপনার হাতে উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

সৌজন্যেঃ বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *