Main Menu

সিলেটে বিধিনিষেধের প্রথম দিনে অভিযান ও জরিমানা

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইস্যুতে সরকারের দেওয়া ১১ বিধিনিষেধ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হয়েছে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সকাল থেকে মাঠে ছিলো সিলেট জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে জরিমানা আদায় করা হয়।

সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার রেহেনা আক্তার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, নগরীর আম্বরখানা, চৌহাট্টা ও মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। অভিযানকালে মাস্ক না পরার দায়ে ৩ জনের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।

তিনি জানান, এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।

এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান সহকারী কমিশনার রেহেনা আক্তার।

এদিকে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, বাসসহ কোনো গণপরিবহনই অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করেনি। আর সিএনজি অটোরিকশা শুধু নগরীর ভেতরে ৩জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করলেও অন্যান্য স্থানে ৫ জন নিয়েই চলাচল করেছে। তাছাড়া যাত্রীদের বেশিরভাগেরই মুখে ছিলো না মাস্ক। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নজরদারি চোখে পড়েনি।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইস্যুতে ১১ বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব এবং দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলী/চলাচলে নিম্নোক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

১. দোকান, শপিংমল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

২. অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারা দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।

৩. রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকার সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

৪. ১২ বছরের ঊর্ধ্বের কোনো ছাত্র-ছাত্রীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের পরে টিকার সনদ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

৫. স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দরসমূহে স্ক্রিনিং-এর সংখ্যা বাড়াতে হবে। পোর্টসমূহে ক্রু-দের জাহাজের বাইরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে হবে। স্থলবন্দরগুলোতেও দেশের বাইরে থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে শুধু ড্রাইভার থাকতে পারবে। কোনো সহকারী আসতে পারবে না। বিদেশগামীদের সঙ্গে আসা দর্শনার্থীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

৬. ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে। সর্বপ্রকার যানবাহনের চালক ও সহকারীদের আবশ্যিকভাবে কোভিড-১৯ টিকার সনদধারী হতে হবে। (ট্রেন-বাস অর্ধেক যাত্রী বহন করবে ১৫ জানুয়ারি থেকে, লঞ্চের তারিখ এখনো জানা যায়নি)

৭. বিদেশ থেকে আগত যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলক কোভিড ১৯ টিকার সনদ প্রদর্শন এবং র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে।

৮. স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে দেশের সব মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

৯. সর্বসাধারণের করোনার টিকা এবং বুস্টার ডোজ গ্রহণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রচার ও উদ্যোগ নেবে। এক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহায়তা গ্রহণ করবে।

১০. কোভিড আক্রান্তের হার ক্রমবর্ধমান হওয়ায় উন্মুক্ত স্থানে সর্বপ্রকার সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা সমাবেশসমূহ পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

১১. কোনো এলাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

তবে করোনা মহামারি প্রতিরোধে দেশের গণপরিবহন অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চলাচলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণপরিবহনে যত আসন রয়েছে তত যাত্রী পরিবহন করা হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

তিনি বলেন, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার আমাদের জানিয়েছেন শনিবার থেকে গণপরিবহনের যত আসন রয়েছে তত যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। কারণ অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করলে পরিবহন সংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যাত্রী এবং পরিবহন চালক ও হেলপারদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে।

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ আরও বলেন, আমরা সকল পরিবহন মালিকদের বিআরটিএর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। এক্ষেত্রে যারা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মানবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *