Main Menu

ব্রিটিশ আদালতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর আবেদন খারিজ

উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর আবেদন খারিজ করেছে ব্রিটিশ আদালত। আদালতের আদেশে বলা হয়, অ্যাসাঞ্জের বর্তমান মানসিক অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে তাকে পাঠানো হলে এটি হবে `নিষ্ঠুর’ আচরণ।

সোমবার লন্ডনের ওল্ড বেইলির আদালতে ডিস্ট্রিক্ট জজ ভেনেসা ব্যারাইতজার এই আদেশ দেন।

আদেশে তিনি বলেন, অ্যাসাঞ্জ ছিলেন হতাশ ও কখনো কখনো নিরাশ ব্যক্তি, যার কারাগার কর্তৃপক্ষের আত্মহত্যা প্রতিরোধে নেয়া ব্যবস্থা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জ্ঞান ও সংকল্প ছিলো।

আদালতের আদেশে বলা হয়, যদি যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসাঞ্জকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়, তবে তিনি এমন প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হবেন যেখানে কারাগারে সব প্রকার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কমিয়ে আনা হয়। একইসাথে বাইরের পৃথিবীর সাথে যোগাযোগও বিরল হয়ে পরে।’

বিচারক আদেশে বলেন, ‘তিনি এমন অবস্থায় এই সম্ভাবনার মুখোমুখি হবেন যিনি ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের জন্য চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং প্রতিনিয়তই যিনি আত্মহত্যার চিন্তা করেন।’

ব্রিটিশ আদালতের এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত ব্রিটেনের কারাগারেই হচ্ছে ৪৯ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান এই সাংবাদিকের অবস্থান। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে তিনি সাউথইস্ট লন্ডনের উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার বেলমার্শ কারাগারে বন্দী আছেন।

মার্কিন সরকার ব্রিটিশ আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত আদেশের আগ পর্যন্ত এখন অ্যাসাঞ্জকে অপেক্ষা করতে হবে। মার্কিন কৌসুলীরা ১৭ টি গুপ্তচরবৃত্তি ও কম্পিউটারের অপব্যবহারের একটি অভিযোগে অ্যাসাঞ্জকে অভিযুক্ত করছেন। অভিযোগ প্রমাণে তিনি ১৭৫ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

অ্যাসাঞ্জের পক্ষের আইনজীবিরা বলেন, সাংবাদিক হিসেবে প্রথম অ্যামান্ডমেন্টের বাকস্বাধীনতার আওতায় আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অপকর্ম তিনি তুলে প্রকাশ করতে পারেন।

২০১০ সালে মার্কিন সরকারের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে হ্যাকিং করে আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তা প্রকাশ করে দেয়ার জন্য তাকে যুক্তরাষ্ট্র অভিযুক্ত করেছে।

২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন দেশের সরকারের গোপন থাকা তথ্য প্রকাশের প্রচেষ্টা নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিভিন্ন বিপুল গোপন তথ্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে তা প্রকাশ করেন। ওই সময় ইরাকে মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টার থেকে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকসহ ডজনখানেক নিরস্ত্র সাধারণ ইরাকির ওপর গুলি করে হত্যার ৩৯ মিনিটের এক ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে উইকিলিকস বিপুল পরিচিতি পায়।

২০১০ সালে সুইডেনের দুই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ প্রথম আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হন। ওই সময়ে সুইডেন ধর্ষণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্রিটেনের কাছে অ্যাসাঞ্জকে পাঠানোর জন্য আবেদন করে।

২০১২ সালে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুইডেনে যাওয়া এড়াতে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের ইকুয়েডোরিয়ান দূতাবাসে আশ্রয় নেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় বন্দী অবস্থায় তিনি দূতাবাসে কাটান।

২০১৯ সালে ইকুয়েরডর সরকার অ্যাসাঞ্জকে দেয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিলে ব্রিটেনে দেশটির দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ।

সূত্র: আলজাজিরা






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *