Main Menu

বিমানের ড্যাশ ৮-৪০০ ধ্রুবতারা উড়োজাহাজের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিমানের নতুন একটি উড়োজাহাজ ড্যাশ ৮-৪০০ ধ্রুবতারা’র উদ্বোধন করে বলেছেন, তাঁর সরকার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আঞ্চলিক পর্যায়ে একটি সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আমাদের পার্শবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে একটি সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেই সব বিমান ক্রয় করছি যেগুলো সব থেকে আধুনিক এবং উন্নতমানের। আর আজকে যে বিমানটি উদ্বোধন করতে যাচ্ছি তার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের পাশাপাশি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সক্ষম হব।’
বাংলাদেশের চমৎকার ভৌগলিক অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগ বাড়াতে পারি তাহলে সবদিক থেকেই আমাদের উন্নতি হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ইতোমধ্যেই অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। যার অংশ হিসেবে আজ এই নতুন উড়োজাহাজ ড্যাশ ৮-৪০০ এর উদ্বোধন করছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বেলা ১১ টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নতুন বিমানের উদ্বোধন করেন।
নতুন বিমানটির নাম তিনি ধ্রুবতারা রেখেছেন এবং নতুন আনা বিমানগুলোর নামকরণ দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তিনিই করেছেন, যে কাজে তাঁকে ছোট বোন শেখ রেহানা সহযোগিতা করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙ্গা প্রভাত, মেঘদূত, ময়ুরপঙ্খী, আকাশবীনা, হংস বলাকা, গাঙ্গচিল, রাজ হংস, অচিনপাখি, সোনারতরি। আর আজ যেটা উদ্বোধন করতে যাচ্ছি সেটা ধ্রুবতারা, বলেন তিনি।
‘ধ্রুবতারা’ আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দেয় উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছি আর ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হবে। কাজেই, এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধ্রুবতারা নামটি পছন্দ করেছি। নামগুলোর পছন্দ করায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমার ছোট বোন শেখ রেহানা।’
করোনাভাইরাস এসে আমাদের সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে, সমস্ত কর্মকান্ডকে স্থবির করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। এটা শুধু বাংলাদেশের নয় সমগ্র বিশ^ব্যাপীই এই সমস্যাটা হচ্ছে।
তিনি এ সময় নতুন বিমান আনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিমানের পদক্ষেপকে ‘অত্যন্ত সাহসী’ আখ্যায়িত করে সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যগণ, সচিব এবং বাংলাদেশ বিমানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং উর্ধ্বতন সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন।
গণভবণ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ২০টি ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন, বিভিন্ন জেলা সদরে নির্মিত ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং একটি এলপিজি স্টেশন ও উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত হয়ে বক্তৃতা করেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানগণ এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুণর্গঠনকালে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে সকল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার যে উদ্যোগ জাতির পিতার নিয়েছিলেন তা যদি পরবর্তী সরকারগুলো অনুসরণ করতো তাহলেও দেশ অনেক দূর এগোতে পারতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য তা হয়নি। অবশ্য ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন আবার ক্ষমতায় আসে তার পরেই এদেশে উন্নয়নের যাত্রা আবার শুরু হয়।
এ সময় দেশে নতুন নতুন বিমান বন্দর প্রতিষ্ঠা এবং পুরতন বিমান বন্দরগুলোর আধুনিকায়নসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল, কার্গো টার্মিনাল এবং বোর্ডিং ব্রিজ করা থেকে শুরু করে সরকারের চার মেয়াদে বিমানকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে চলাচলের উপযোগী করে তোলায় সরকারের পদক্ষেপ সমূহের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন বিমানবন্দরগুলোকে আরো উন্নত করা হচ্ছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালও নির্মাণ হচ্ছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করা হচ্ছে, সৈয়দপুর এবং সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে আরো উন্নত করা হচ্ছে।
দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়েই আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন কোন দেশে আমাদের প্লেন নামে তখন আমাদের প্লেনটি দেশের একটি বার্তা নিয়েই সেখানে যায়। সমগ্র দেশের পরিচয় ঘটে এর মাধ্যমে। আর জাতির পিতা বিমানের লোগো করা থেকে শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সৃষ্টি করে সে কাজের গোড়াপত্তন করে যান।’
বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পুরাতন জবুথবু অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিমান বহরে এখন বিমানের সংখ্যা ১৯টি উন্নীত হয়েছে, স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিমানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে সদ্য যুক্ত হওয়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সম্পূর্ণ নতুন ১ম ড্যাশ ৮-৪০০ এয়ার ক্রাফট হচ্ছে এই ধ্রুবতারা।
বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে ক্রয়কৃত ৩টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজের মধ্যে ১ম টি এটি। কানাডার প্রখ্যাত উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড নির্মিত, ৭৪ আসন বিশিষ্ট ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজটি পরিবেশবান্ধব এবং অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ।
নতুন উড়োজাহাজটি সংযোজিত হওয়ায় বিমান বহরে বিদ্যমান মোট উড়োজাহাজের সংখ্যা ১৯টি, তন্মধ্যে মধ্যে ৪টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ৬টি বোয়িং ৭৩৭ এবং ৩টি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ।

বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *