লেবানন সীমান্তে মুরগি দেখে আতঙ্কে গুলি ইসরাইলি সৈন্যদের
লেবাননের একটি মুরগি ইসরাইলের সীমান্তে ঢুকে পড়ায় লেবাননের দিকে ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে ইসরাইলি সৈন্যরা। বুধবার ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ লেবাননের মাইস আল-জাবাল গ্রামের ৯ বছর বয়সী হুসেন চারতৌনি তার ভয়ে পালিয়ে যাওয়া মুরগিটি ধরতে পেছনে তাড়া করলে এটি ইসরাইল সীমান্তে ঢুকে পড়ে। আর এতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ইসরাইলি সৈন্যদের মাঝে। ফলশ্রুতিতে তারা লেবাননের দিকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে।
কৌশলগতভাবে ইসরাইল এবং লেবানন এখনো যুদ্ধের মধ্যে রয়েছে এবং তাদের যৌথ সীমান্ত জুড়ে প্রায়ই উত্তেজনা পরিলক্ষিত হয়।
টুইটারে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বালক হুসেন ব্যাখ্যা করছে- ঘটনার আগের দিন তার বাবা চারটি মুরগি কিনেছিলেন। চারটির মধ্যে দু’টি তার জন্য, অন্য দু’টি তার ভাইয়ের জন্য।
পরদিন সকালে দু’ভাই যখন মুরগিগুলোকে খাবার দেয়ার জন্য মুরগির খোপ খুলে তখন হুসেনের একটি মুরগি বেরিয়ে যায়।
মুরগিটি ইসরাইলি সৈন্যদের পাহারায় থাকা একটি বেড়ার দিয়ে প্রায় ৭০ মিটার চলে যায়।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, আরবি ভাষায় চারতৌনি ব্যাখ্য করছে, ‘আমি আমার মুরগি ধরতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ইসরাইলি সৈন্যরা ভয় পেয়ে আকাশে-বাতাসে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে।’
‘আমি ভয় পাইনি। আমি শুধু আমার মুরগি ধরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা (ইসরাইলি সৈন্যরা) আমার মুরগিটি ধরে নিয়ে গেছে এবং তা আর ফেরত দেয়নি। … আমি এটি ফেরত চাই,’ বলছিল ৯ বছরের চারতৌনি।
মুরগিটি পরে চারতৌনির কাছে ফেরতে দেয়া হয়েছিল কিনা তা জানা জায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পরবর্তী কিছু ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, ৯ বছরের বালকটি অজানা এক শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছ থেকে নতুন মুরগি গ্রহণ করছে।
এ ঘটনার পর, ‘আমি আমার মুরগি চাই’ এরকম একটি আরবী হ্যাশট্যাগ ব্যাপকহারে টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে, যা চারতৌনিকে জাতীয় নায়কে পরিণত করে।
সারা হাজ নামের একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমাদের ভূখণ্ডে ইহুদিবাদী হানাদারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ লেবানন কেন দাঁড়িয়েছে, চারতৌনি হুসেন তার উদাহরণ।
দ্বিতীয় একটি টুইটে তিনি যোগ করেন, “আমি ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীকে ‘মুরগির সেনা’ হিসেবে ডাকতে চাচ্ছি। তবে হুসেনের অপহৃত মুরগির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকে তা থেকে বিরত থাকলাম। তোমার বীরত্ব মহিমান্বিত হোক হে বন্ধু হুসেন!”
অন্যরা ইসরাইলকে এই কিশোর ছেলেটির মুরগি ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
২০১৯ সালেও এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। লেবাননের আল-ক্বাওজাহ গ্রামের খামার থেকে ট্যাকটাচ নামের একটি বানর উত্তর ইসরাইল সীমান্তে ঢুকে পড়ে।
ঘটনার ১৭ দিন পর ইসরাইলি সৈন্যরা ট্যাকটাচকে ধরে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর (ইউএনআইএফআইএল) কাছে হস্তান্তর করে।
মাইস আল-জাবাল গ্রামটি ইসরাইল ও লেবাননকে পৃথককারী জাতিসঙ্ঘের নির্ধারিত ব্লু লাইন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
ইউএনআইএফআইএল এই অঞ্চলে টহল দিলেও অঞ্চলটিতে প্রায়ই উত্তেজনা দেখা দেয়।
Related News
গাজার জন্য জরুরি ত্রাণ পৌঁছে দিতে ইসরাইলকে নির্দেশ বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতের
প্রায় ছয় মাসের অবিরাম সংঘাতের পর আসন্ন দুর্ভিক্ষের সতর্কতা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালতRead More
গাজায় কয়েকটি হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েল হামাস তুমুল লড়াই চলছে
অবরুদ্ধ গাজার বেশ কয়েকটি হাসপাতালের চারিদিকে ইসরায়েল বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। এদিকে কয়েকটি হাসপাতালের আশপাশেRead More