Main Menu

‘ডেঞ্জারজোন’ টিলাগড়ে লাল নিশান উড়িয়ে সন্ত্রাসী ও গডফাদার মুক্ত করার দাবি

ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ, সিলেট কৃষি বিশ^দ্যিালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান সিলেট নগরীর টিলাগড়ে। যে এলাকাটি সিলেটে শিক্ষা অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিলো সেটিই এখন হয়ে ওঠেছে সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তদের অভায়রণ্য। একের পর এক সংঘাত, খুনাখুনি, সন্ত্রাসী, ভ’মিদখল, চাঁদাবাজি ঘটনা এই এলাকায় ঘটেই চলছে। সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজের ছাত্রবাসা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী।
সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠা ও একের পর এক অপরাধ কর্মকান্ডের কারণে টিলাগড় হয়ে ওঠেছে নগরবাসীর কাছে আতঙ্কজাগানিয়া নাম। ‘ডেঞ্জারজোন’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেছে এই এলাকা। এই ‘ডেঞ্জারজোনকে’ সন্ত্রাসী ও গডফাদার মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে ‘দুস্কাল প্রতিরোধে আমরা’ নামের নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে টিলাগড়ের এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে লাল নিশান উড়িয়ে ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠা এই এলাকার সন্ত্রাসী ও গডফাদারদের হঠিয়ে শিক্ষার্থী, নারী ও সাধারণ মানুষদের বিপদমুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এসবের প্রতিবাদে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকদের নিয়ে ‘দুস্কাল প্রতিরোধে আমরা’ নামের এই নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়। ধর্ষকদের দ্রুত শাস্তি, তাদের মদদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ধর্ষিতাকে সামাজিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে সিলেটে টানা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে এই প্ল্যাটফর্ম। ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবার ‘টিলাগড় ও বালুচর এলাকার সন্ত্রাসী ও গডফাদারমুক্ত না করা পর্যন্ত জরুরী সতর্ককরণে লাল নিশান উড্ডয়ন’ কর্মসূচী পালন করা হয়।
বিকেলে টিলাগড় পয়েন্ট থেকে মিছিল নিয়ে এসে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে লাশ নিশান উড্ডয়ন করা হয়।
এসময় সক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা বলেন, এমসি কলেজ দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণেও এটি বিখ্যাত। এখানে শিক্ষার্থীদের পাশপাশি নানা স্থান থেকে দর্শনার্থী-পর্যটকরা আসবেন। সকলের জন্যই এটি উন্মুক্ত ও অবারিত থাকা উচিত। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই প্রতিষ্ঠানটি সন্ত্রাসী ও দুবৃত্তদের অভয়রাণ্য হয়ে ওঠেছে। কেউ কলেজে ঘুরতে আসলেই তাকে হয়রানী করা হয়, যৌণ নিপীড়ন করা হয়। ছিনতাইয়ের শিকারও হন অনেকে। কেবল এমসি কলেজে নয়, পুরো টিলাগড় এলাকাকেই অপরাধীদের রাজত্ব কায়েম করেছে। কতিপয় গডফাদারদের আশ্রয়ে এই অপরাধীরা দিন দিন বেপোরোয়া হয়ে ওঠেছে। আমরা গডফাদারমুক্ত-সন্ত্রাসীমুক্ত এমসি কলেজ ও টিলাগড় চাই। আমরা চাই এই কলেজ, এই অঞ্চল সকল মানুষের বাসযোগ্য হবে। দর্শনার্থী, পর্যটক সকলের জন্য নিারপদ হবে। তাই সন্ত্রাসী ও তাদের গডঅদারদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা না হলে এই এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যাবে। মানুষজন এখানে এসে হয়রানির শিকার হবে। নারীরা নিপীড়িত হবে।
বক্তারা বলেন, ছাত্রাবাসের ধর্ষণকান্ডের আগেও এই এলাকায় অনেক নারী নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কলেজ প্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয় নি। তাদের আস্কারা পেয়েই সন্ত্রাসীরা আরও বেপোরোয়া হয়ে ওঠেছে। তাই আর ঘরে বসে থাকা যায় না। আর চুপ করে থাকা যায় না। আমাদের ক্যম্পাস আমাদের নগরকে সন্ত্রাসী ও গডফাদারমুক্ত করতে সকল নগরবাসীকে আওয়াজ তুলতে হবে। সকলকে প্রতিবাদে শামিল হতে হবে।
শনিবারের কর্মসূচী শেষে ‘দুস্কাল প্রতিরোধে আমরা’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ধর্ষণ, যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে জাগিয়ে তুলতে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতামুলক সভা করবে ‘দুস্কাল প্রতিরোধে আমরা’। সাধারণ মানুষদের নিয়ে ধর্ষক ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘দুস্কাল প্রতিরোধে আমরা’-এর সংগঠক আব্দুল করিম কিম, আশরাফুল কবির, দেবাশীষ দেবু, দেবব্রত চৌধুরী লিটন, বিমান তালুকদার, নিরঞ্জন সরকার অপু, প্রলয় দেব, রাজীব রাসেল, অদিতি দাশ, হিতাংশ কর বাবু, সঞ্জয় দাশ, ইয়াকুব আলী প্রমুখ।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *