Main Menu

আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কক্সবাজারের রামু থানার ওসি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সফর সঙ্গী শিপ্রা রানী দেবনাথের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার জব্ধ তালিকায় গরমিল থাকায় আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কক্সবাজারের রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় রামুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওসি আবুল খায়ের।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক মো. দেলোয়ার হোসেন মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদেশ দেবেন।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের সহকর্মী শিপ্রা রানী দেবনাথকে আটকের পর তার কাছ থেকে উদ্ধার করা মালামাল নিয়ে দুটি জব্দ তালিকা করায় রামু থানার ওসি মো. আবুল খায়েরকে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে গত ২০ আগস্ট আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আদালত নম্বর-১) আদালতের বিচারক মোহাং হেলাল উদ্দিন।

গত ৩১ আগস্ট মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানকে হত্যা করার পর মেরিন ড্রাইভ রোডের হিমছড়ি নীলিমা রিসোর্ট থেকে স্টামফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিপ্রা রানী দেবনাথকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে রামু থানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দিয়ে চালান দেয়। যার নম্বর : জিআর-৩১১/২০২০ (রামু)।

শিপ্রাকে গ্রেপ্তারের সময় তার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ২৯ রকমের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস জব্ধ তালিকায় আনা হয়নি। শুধুমাত্র কিছু বিদেশি মদের বোতল, ২ পোটলা গাঁজা ও কিছু মাদকদ্রব্য জব্ধ তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে রামু থানা কর্তৃপক্ষ পৃথক আরেকটি জব্ধ তালিকা তৈরি করে এবং জিডিমূলে বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলা রুজু করে শিপ্রার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও অন্য মালামাল রামু থানার এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই শফিকুল ইসলামের হেফাজতে রাখে এবং মামলাটি আদালতে প্রেরণ করে।

দ্বিতীয় জব্দ তালিকা তৈরির সময়কাল রামু থানা কর্তৃপক্ষ তাতে ১ আগস্ট উল্লেখ করলেও এ সংক্রান্ত বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলাটি দীর্ঘ পাঁচদিন পর ৬ আগস্ট আদালতে প্রেরণ করেন।

রামু থানার জিআর-৩১১/২০২০ নম্বর মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারকে দেওয়া হলে তিনি রামু থানা কর্তৃক শিপ্রার জব্দকৃত সকল মালামাল তার হেফাজতে আনার জন্য ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলাটির তদন্তভার নিতে আদালতে আবেদন করেন। আদালতে শুনানিকালে রামু থানার বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলার আইও শফিকুল ইসলাম র‌্যাবের এই আবেদনের বিরোধিতা করে শিপ্রার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মালামাল তার হেফাজতে রাখতে ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলাটি তার মাধ্যমে তদন্ত অব্যাহত রাখার অনুমতি দিতে আবেদন জানান।

আবেদন শুনানির সময় আদালত রামু থানার আইও শফিকুল ইসলামের কাছে একটি মামলায় কেন দুটি জব্দ তালিকা তৈরি করে, বিবিধ মামলাটি কেন সৃষ্টি করা হলো? এমন প্রশ্ন করলে পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম এর কোনো সদুত্তর আদালতে দিতে পারেননি। পরে আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে তিনটি পৃথক আদেশ দেন।

আদেশ সমূহের মধ্যে প্রথম আদেশটি হলো, একটি মামলায় কেন দুটি জব্দ তালিকা তৈরি করে বিবিধ মামলাটি কেন সৃষ্টি করা হলো-তার আইনগত জবাব দিতে পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ওসি আবুল খায়েরকে আদালতে তলব।

দ্বিতীয় আদেশটি হলো, শিপ্রাকে গ্রেপ্তারের সময় তার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসহ সকল মালামাল হস্তান্তর করতে ও বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলার তদন্তভার জিআর-৩১১/২০২০ (রামু) নম্বর মামলার বর্তমান আইও র‌্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমান চন্দ্র কর্মকারকে প্রদান।

তৃতীয় আদেশটি হলো, বিবিধ ১/২০২০ নম্বর মামলা ও শিপ্রার মালামাল সমূহ রাখার জন্য রামু থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলামের করা আবেদনটি খারিজ।

এদিকে, আদালতের আদেশে শিপ্রা রানী দেবনাথ এর ২৯ পদের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গত ২০ আগস্ট দিবাগত রাতে র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করেছে রামু থানা।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের শামলাপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ওই ঘটনায় টেকনাফ থানায় একটি ও রামু থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছিল। রামু থানার মামলায় আসামি করা হয়েছিল স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিপ্রা দেবনাথকে। ১ আগস্ট তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ৯ আগস্ট জামিনে কারামুক্ত হন শিপ্রা।

৩ জুলাই স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তিন শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাহসিন ইফাত নূর কক্সবাজারে আসেন। ‘জাস্ট গো’ শিরোনামে মেজর (অব.) সিনহা যে তথ্যচিত্র নির্মাণের কাজ করছিলেন, সেখানে কাজ করছিলেন এই তিন শিক্ষার্থী।

সৌজন্যে: নিরাপদ নিউজ






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *