Main Menu

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, নতুন আক্রান্ত সর্বোচ্চ ৪,০০৮ জন

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা কমেছে। তবে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় ৪৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১০ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল রেকর্ড সংখ্যক ৫৩ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এই পর্যন্ত এ ভাইরাসে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৩০৫ জন।
শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ দশমিক ০১ শতাংশ কম।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক ১৭ হাজার ৫২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ হাজার ৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। গতকালের চেয়ে আজ ১৪৬ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৮৬২ জন।
দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৯৮ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৯৮ হাজার ৪৮৯ জন রোগী রয়েছেন।
তিনি জানান, নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন।
নাসিমা সুলতানা জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক ১৮ হাজার ৯২২টি নামুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৪০৩টি নমুনা। গতকালের চেয়ে আজ ৫১৯টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৬১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে সর্বাধিক ১৭ হাজার ৫২৭টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ২১৪টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩১৩টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ৫১ হাজার ২৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ।
তিনি বলেন, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ১ জন, ময়মনসিংহে ২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৭ জন এবং বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫ জন। আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এসেছেন ১ জন।
অধ্যাপক নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭১৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ৭৫২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৬৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৫ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২ টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারিন্টিন মিলে কোয়ারিন্টিন করা হয়েছে ৩ হাজার ৪১ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৯ হাজার ৮২০ জনকে কোয়ারিন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারিন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩০ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারিন্টিনে আছেন ৬২ হাজার ৪৯০ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘন্টায় সংগ্রহ হয়েছে ৩৯ হাজার ১৪৩টি। বিতরণ হয়েছে ১৬ হাজার ৩শ’টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ২৪ হাজার ২৮৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ’টি। বর্তমানে ১ লাখ ৯০ হাজার ২৮০টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৭০টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৯টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৬২ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৫ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৯০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ২০ হাজার ৮৯৬ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ২৮১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬৭৩ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৮২ জন এবং এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪০৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৬ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৫০২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৯১ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ২৫৫ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন বলে তিনি জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

সৌজন্যেঃ বাসস






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *